ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পূর্বপ্রান্তীয় পার্বত্য অম্ফল ডুমুর নামক স্থান থেকে উৎপন্ন। নদীটি উৎস থেকে পার্বত্যভৃমির মধ্য দিযে় ১৫০ কিমি সর্পিল পথ পার হযে় কুমিল্লা সদর উপজেলার কটক বাজারের কাছে বাংলাদেশ ভৃখণ্ডে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশে প্রবেশের পর এটি আঁকাবাঁকা প্রবাহপথে কুমিল্লা শহরের উত্তর প্রান্ত এবং ময়নামতির পূর্ব প্রান্ত অতিক্রম করে বযে় চলেছে। প্রবাহপথের উত্তর দিকে বুডি়চং উপজেলাকে রেখে এটি দেবিদ্বার উপজেলার মধ্য দিযে় প্রবাহিত হযে় কোমপানীগঞ্জ বাজারে পৌঁছেছে। ময়নামতি থেকে কোমপানীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কিলোমিটার। কোমপানীগঞ্জ থেকে পশ্চিম দিকে বাঁক নিযে় নদীটি শেষাবধি দাউদকান্দি উপজেলার শাপটা নামক স্থানে এসে মেঘনা নদীতে পতিত হযে়ছে। কোমপানীগঞ্জ এবং দাউদকান্দির মধ্যে নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার। বাংলাদেশ ভৃখণ্ডে গোমতী নদীর মোট দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিমি। গোমতীর গুরূত্বপূর্ণ উপনদীসমূহের একটি ডাকাতিয়া এবং এর শাখা নদীর নাম বুডি়।গোমতী তীব্র স্রোত সমপন্ন একটি পার্বত্য নদী। কুমিল্লায় এর প্রবাহ মাত্রা ১০০ থেকে ২০,০০০ কিউসেক পর্যন্ত উঠানামা করে। নদীটির বর্ষাকালীন গড় প্রশস্ততা প্রায় ১০০ মিটার। এ সমযে় নদীটি কানায় কানায় পূর্ণ থাকে এবং স্রোতও হয় দ্রূতগতি সমপন্ন। কিন্ম শীত মৌসুমে এর গতিধারা সংকীর্ণ হযে় আসে এবং অধিকাংশ স্থানে হেঁটেই নদী পার হওয়া যায়। স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের বছরে নদীর পানির উচ্চতা পাশর্ববর্তী এলাকার স্তর থেকে ১.৫ মিটারের উপরে বৃদ্ধি পায়। আকস্মিক বন্যা এই নদীর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য এবং এ বন্যা মোটামুটি নিয়মিত বিরতিতে সংঘটিত হযে় থাকে। এজন্য এ নদী একসময় ‘কুমিল্লা শহরের দুঃখ’ হিসেবে পরিচিত ছিল। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীটির ধগ্ধংসাত্মক প্রবণতা প্রতিরোধে এবং কুমিল্লা শহর রক্ষায় বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বন্যা প্রতিরোধের জন্য ভেডি়বাঁধ এবং নদীর গতিপথ সোজা রাখতে ১৯টি লুপকাট নির্মাণ করা হযে়ছে। এসকল ব্যবস্থা গৃহীত হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন সময় বন্যার প্রকোপে কুমিল্লা শহর বিপদাপন্ন হযে় পডে়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক গৃহীত আরও কিছু সংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়নের পর, বর্তমানে গোমতী দৃশ্যত নিয়ন্যণাধীন।নদীটিতে বৃহৎ নৌকা চলাচলের জন্য প্রযে়াজনীয় নাব্যতা নেই। কুমিল্লা, ময়নামতি, বুডি়চং, কোমপানীগঞ্জ, মুরাদনগর এবং দাউদকান্দি এই নদীর তীরবর্তী উল্লেখযোগ্য স্থান। দাউদকান্দি পর্যন্ত গোমতী জোয়ারভাটা প্রভাবাধীন, কিন্ম উজান অম্ফলে জোয়ারভাটার প্রভাব পরিলক্ষিত হয় না। গোমতী নদীর তীরে গড়ে উঠা সুবিল ইউনিয়ন ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস